যে কথা বলা হয়নি তারে (ছোটো গল্প)
লিখেছেন লিখেছেন মামুন ২৬ সেপ্টেম্বর, ২০১৪, ১১:৪৪:০৬ সকাল
দেখতে দেখতে তেইশটি বসন্ত পার হয়ে গেলো।
এখন বয়স তেতাল্লিশ।
তখন বয়স ছিলো এক কুড়ি। সবে জীবনের প্ল্যাটফর্মে পা দেবার বয়স। না হলে জন্মের পর থেকে এই কুড়ি বছর তো বলতে গেলে খেলা-ধুলায়-ই কেটে যায়। জীবনের চলার পথে তখন যেন চোখ ফুটছে রায়হানের। এইচ.এস.সি পাস করে ভার্সিটিতে কেবল ক্লাশ শুরু করেছে। নতুন এক জগত... পুরনো বন্ধুদের সাথে নতুন কিছু মুখ... আর নতুন জীবনের হাতছানির ভিতরেও এক ফেলে আসা মুখের প্রতিচ্ছবি ওর অবচেতন মনের প্রতিটি একান্ত সময়ে বসন্তের অনুভূতিতে গ্রীষ্মের প্রখরতাকে মনে করিয়ে দিতো! টক-ঝাল-মিষ্টি এক অনুভব কখনো বা তিক্ততায় ভরে উঠত। আসলে ওর কুড়ি বছরের সেই সময়টিতে সে হৃদয়ের ভিতরে ভালোবাসার প্রচন্ড এক আগ্নেয়গিরিকে ধারণ করেও সঠিক সময়ে তাকে উদ্গীরণ না করাতে নিজের ভিতরেই বিস্ফোরিত হয়েছে... নিজেকে যন্ত্রনায় ক্লিষ্ট করেছে অনুক্ষণ। আজ ভাবে কেন যে সেদিন ওকে মনের কথাটি জানালো না! সব কিছুই তো ওর জন্য সুন্দর ভাবে সাজানো ছিল। শুধু হৃদয়ের কথাগুলোকে মুখ দিয়ে বের করে দিলেই হত। সেগুলো হৃদয় থেকে কন্ঠনালী পর্যন্ত এসেও আবার পিছু রাস্তা ধরে হৃদয়ে ফিরে গিয়েছিল।
খুব পুরনো একট সোফা সেট! এখানে জড়িয়ে আছে রায়হানের জীবনের খুবই নস্টালজিক কিছু মুহুর্ত!! প্রতিদিন একবার সে এখানে এসে বসে... সময়ের অদৃশ্য এক যন্ত্রে কিভাবে যেন বিশ বছর আগে ফিরে যায়... একটি বিশেষ সময় তার নিজস্ব ঘ্রানে রায়হানের মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করে... সেই অনিন্দ্য মুখচ্ছবিটি হৃদি-আয়নায় ভেসে উঠে। একটি গান স্মৃতির মনিকোঠা থেকে সজোরে বুকে আঘাত করে... প্রচন্ড এক ভালোবাসার আকর্ষণে দমবন্ধ অনুভূতিতে আচ্ছন্ন হয়ে গানের কথাগুলো শুনতে শুনতে রায়হানের গলার কাছে কি যেন আটকে থাকে। ওকে আরো পিছনে স্মৃতির পাখিরা টেনে নিয়ে যায়... অদৃশ্য এক মাকড়সা জাল বুনতে থাকে... অনেক পুরনো কিছু স্মৃতি ভীড় করে... রায়হান একটা টানেলের ভিতর দিয়ে ছুটে চলে শেষ মাথায় তীব্র এক আলোকরশ্মির আকর্ষণে।
... ... ...
রায়হানের ফুসফুসের প্লুরা পর্দায় পানি জমে ইনফেকশন হওয়াতে ওকে যশোহরের আবহাওয়া থেকে অন্যত্র নিয়ে যাবার নির্দেশ ছিলো ডাক্তারের। কিন্তু ওর আব্বা চাইলেই তো আর যেতে পারেন না। তো অনেক দেন-দরবার করে তিনি ওনার চাকুরিস্থল চট্টগ্রামে ট্রান্সফারে সক্ষম হয়েছিলেন। তাতেও প্রায় রায়হানের অসুখের পরবর্তি তিন বছর লেগে যায়।
ওর এস,এস,সি পরীক্ষার আগে টেস্ট পরীক্ষা দিয়ে সে চট্টগ্রামে আব্বা-আম্মার কাছে চলে যায়। এর আগে রায়হানদের পুরা পরিবার যশোহর থেকে চট্টগ্রামে শিফট হয়েছিল। সে টেস্ট পরীক্ষার জন্য যশোহরে ওর আব্বার এক বন্ধু রেজা আংকেলের বাসায় থেকে গেলো টেস্ট পরীক্ষার জন্য। ওনার দুই ছেলে ও দুই মেয়ে। বড় মেয়ের পরে দুই ছেলে। সবার ছোট মেয়ে ছিলো নিপা'। আসল নাম শামীম আরা পারভিন। কিন্তু সবাই ডাকে নিপা।ওর ইমিডিয়েট বড় সোহেল ছিলো রায়হানের বন্ধু ও ক্লাশমেট। ছোট বেলা থেকে দুই পরিবারের ভিতর যে কোনো পারিবারিক অকেশনে ওদের উপস্থিতি ছিলো অনিবার্য। এভাবে যে যার মত বড় হচ্ছিল। এরই ভিতর রায়হানের আব্বা ট্রান্সফার হয়ে গেলেন।ওদের পরিবার দুটির মধ্যে এক নিরবিচ্ছিন্ন জার্ণিতে কেমন যেন ছেদ পড়ল।
রায়হান নিপাদের বাসায় থেকে পরীক্ষা দিলো। এই ক'দিনে নিপার সাথে ওর কেমন যেনো একটা কি হয়ে গেলো।আগে তো কখনো ওকে দেখে এমন হয় নি।বুঝল ওর ভিতরে কিছু একটা পরিবর্তন আসছে। একটি ছেলে ও একটি মেয়ে দুজনে নির্জনে একা থাকলে যে শারীরিক চাহিদা তৈরী হয়, এটা সে চাহিদাকে ছাপিয়ে রায়হানের ভিতরে অন্য এক অনুভুতির দুয়ার খুলে দিলো যেনো। সে হারিয়ে যেতে থাকল... ক্রমশ একটা ওয়ান ওয়ে রোডের ভিতর দিয়ে শত সহস্র কোটি নক্ষত্রের আলোকবর্তিকার দিকে দ্রুত ধাবমান এক ধুমকেতু যেনো রায়হান! তবে তখনো সে ওকে ওর মনের ভিতর যে কথাগুলো সুপ্ত ছিলো, তা বলতে পারে নি। ওর সামনে গেলেই কেমন যেনো সে হয়ে যায়। মনে মনে কত রিহার্সেল দিয়েছে... কিন্তু সামনে গেলেই রায়হানের পৃথিবী উলটে যেতো। বলি বলি করে আর 'সেই কথাটি' বলা হলনা। এরই ভিতরে রায়হানের চট্টগ্রামে যাবার সময় চলে এলো।
ওর জন্য রেজা আংকেল প্লেনের টিকেট করে এনেছেন। সে আগামিকাল চলে যাবে। রায়হানের জীবনের প্রথম বিমানযাত্রার অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। কিন্তু ওর মনে কোনো শান্তি নাই। সে অনুভব করলো, 'আমার কাম সেরেছে'। আমি গেছি।‘ অবশ্য সবাই এই রকম 'গেছি' অনুভুতি পাওয়ার জন্য রায়হানের ঐ বয়সে অধীর আগ্রহে থাকে। সোহেল রায়হানের সাথে খুব মজা করছে তার প্লেন জার্নি নিয়ে। রায়হান শুধু সময় গুনছে। আর কত ঘন্টা 'নিপার' কাছে থাকতে পারবে।রাতে নিপা রায়হানের রুমে (ওদের গেস্ট রুম) এলো। রায়হান বিছানায় আধশোয়া হয়ে আছে। ওর কিছু লাগবে কিনা নিপা জানতে চায়। সে না বলতেই নিপা চলে যাচ্ছিলো। রায়হান ওকে থামায় –
'একটু বসো’
- কিছু বলবেন? নিপা ওর সুন্দর চোখ দুটি তুলে রায়হানের দিকে পুর্ন দৃষ্টি নিয়ে তাকালো। রায়হান সহ্য না করতে পেরে চোখ নামিয়ে নিলো। নিপা কি ওর মনের কথা বুঝতে পারছে? নিজের হৃদপিন্ডের শব্দে রায়হান নিজেই চমকে যাচ্ছিল। গলা শুকিয়ে আসছে। শেষে নিপাকে বলল-
'একটু পানি খাওয়াবে?'- কেমন যেনো এক অদ্ভুত চোখে ওর দিকে একপলক তাকিয়ে নিপা চলে গেলো। ঐ এক পলকেই রায়হান বুঝে গেলো যে ওকে ওর বলার এখনই সময়। আজ না হলে আর কোনদিনই বলা হবে না। কিন্তু সে কিছুই ওকে বলতে পারল না। নিপা পানি দিতে এসে গ্লাস বেডসাইড টেবিলে নামিয়ে রেখে একটু দাড়ালো। রায়হান কাপুরুষ... মাথা নিচু করে বসে রইলো।একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে নিপা চলে গেলো। ওর সেই দীর্ঘশ্বাস অনেক বছর পর্যন্ত রায়হান শুনেছে।
রায়হান চট্টগ্রামে এসে ওর নতুন জীবনে খাপ খাইয়ে নেবার সংগ্রামে ব্যস্ত। যশোহরের সাথে আস্তে আস্তে ওর সম্পর্ক ফিকে হয়ে আসতে থাকে। সে তখন কলেজ জীবনে নতুন বন্ধুদের সাথে আড্ডা, হাসি-তামাসায় মেতে রয়েছে। তবে মাঝে মাঝে ওর শত ব্যস্ততার ভিতরে এক দমকা হাওয়ার মত নিপা এসে থমকে দাড়ায়। বলে, 'কিছু বলবেন?' ওর সেই কোশ্চেন মার্ক রায়হানকে দুর্বল করে- অস্থির করে। চট্টগ্রামের সব কিছু ছূড়ে ফেলে নিপার কাছে চলে যেতে ইচ্ছে করে। নিজেকে মনে হয় মাথা নীচু করে থাকা এক ভীরু কাপুরুষ যার ইচ্ছা থাকলেও সাহস নেই। তবে সব ইচ্ছাই কি পুরন হবার?
১৯৯১ সাল।
দেশের ভিতরে অনেক আন্দোলনের ফলে নতুন করে দেশ গনতন্ত্রের দিকে এগিয়ে চলার ধাপ অতিক্রম করছে। রায়হান ওর কলেজ জীবন শেষ করে ভার্সিটি জীবনের প্রথম পর্যায়ে। তখন আগ্রাবাদ সি,ডি,এ আবাসিক এলাকায় থাকে। ওখান থেকেই প্রতিদিন ভার্সিটিতে যায়। দুপুরের ট্রেনে করে বাসায় ফিরে আসে। এভাবে চলছিল জীবন।
একদিন ভার্সিটি থেকে বাসায় এসে দেখে বারান্দায় নিপা। ওর মনে হলো সারাদিন নিপার কথা ভাবতে ভাবতে মনে হয় 'হ্যালুসিনেশন' হচ্ছে। কিন্তু রেজা আংকেল এবং আন্ট কে দেখে বুঝল ‘ওর কাম সারার' জন্য আবার নিপার আগমন।
কি খবর, কেমন আছো এই জাতীয় হাল্কা সৌজন্যমূলক কথা বলে ফ্রেশ হতে সে ভিতরে চলে গেল। তবে আনন্দে যে মনটা ঝলমল করছে তা সে না বুঝলেও ওর আম্মা বুঝেছিলেন। রায়হানের আম্মা জানতেন যে সে নিপাকে পছন্দ করে। কিন্তু ওদের মা-ছেলের ভিতরে এটা নিয়ে কখনও কথা হতনা ।
নিপারা চট্টগ্রামে বেড়ানোর জন্য এসেছে। এখান থেকে কক্সবাজার যাবে। ওরা যে কয়েকদিন রায়হানদের বাসায় ছিলো, ওর সব কাজ এলোমেলো হয়ে গেলো। ওর ভার্সিটি যেতে ইচ্ছে করে না, বিকালে হাতেখড়ি মাঠে সবাই মিলে ফুটবল খেলত-সেখানেও যেতে ভালো লাগে না। ছোট পোল এলাকায় তারেক, খোকন, সুমন , মেহেদি, এ্যাপলো, মুন্না- ওদের সাথে টুয়েন্টি নাইন (তাস খেলা) এর আড্ডায় যেতেও ভালো লাগে না। কেমন এক ঘোরের ভিতর রয়ে গেলো সে যেন!
আগের থেকে অনেক সুন্দরী হয়েছে নিপা। শরীরেও অনেক পরিবর্তন এসেছে। ওর দিকে তাকাতে রায়হানের কেমন লজ্জা লাগছিলো। বিকালে বারান্দায় ওর পাশে বসে নিশ্চুপ বসে থাকত। তখন ফীডব্যাক এর রোমেল এর গান বেজে চলতো... 'এক ঝাঁক প্রজাপতি ছিলাম আমরা' কিংবা 'ঝাউবনের পথ ধরে' এই নস্টালজিক গানগুলো।
মাইলস এর তখন প্রথম ক্যাসেট বের হয়েছে। একদিন ঐ গান শুনছিল। নিপা ড্রইং রুমের সোফায় শুয়ে আছে। শাফিন গেয়ে চলেছে-
'প্রথম প্রেমের মত
প্রথম কবিতা এসে বলে
হাত ধরে নিয়ে চলো
অনেক দুরের ও দেশে'।
এই গানটি কিভাবে যেন সোফাতে শুয়ে থাকা নিপার হৃদয়ের সাথে রায়হানের হৃদয়ের এক অদৃশ্য সেতুবন্ধন করে দিলো। ওর ব্রেইনের মেমোরী সেলগুলো সোফায় শুয়ে থাকা এক যুবতীর সেই সময়টির মায়াবি চিত্ররূপ ধারণ করলো। সকল বর্ণ ও গন্ধ সমেত। খুব সুন্দর একটি পারফিউম নিপা মেখেছিল। ওর যুবতী শরীরের নিজস্ব ঘ্রানের সাথে সেই পারফিউম ভালোবাসাকে মিশিয়ে নিয়ে অদ্ভুদ এক মৌ মৌ সুরভি রায়হানের সমগ্র চেতনাকে আবিষ্ট করে রাখলো।
এভাবে দিন চলে যায়। নিপারা কক্সবাজার থেকেও ঘুরে এলো।
কাল ওরা চলে যাবে। সব গোছগাছ চলছে ।রায়হান বারান্দায় বসে আছে। তখন সিগ্রেট ধরেছে। একটা ধরিয়ে টানছে এমন সময় ও এলো। ওকে দেখে আরো এক টান দিয়ে সিগ্রেটটা দু আঙ্গুলের টোকা দিয়ে বাহিরে ফেলে দেয়। নিপা বলল-
'কি লাভ হয় এগুলো টেনে?'
-'কোনো লাভ নাই। এমনি-ই খাই'। কথা ঘুরানোর জন্য বলে রায়হান-
-'কাল তো চলে যাচ্ছো?'
'হ্যা।'
কিছুক্ষন চুপ রইলো দুজনে।
'আপনি কি কিছু বলবেন আমাকে?'
-'না। তুমি কি কিছু বলতে চাও?'
'না।' তবে নিপা মুখে না বললেও ওর দৃষ্টি অনেক কিছু বলতে চাইছিলো। ওর হৃদয়ের অব্যক্ত কথাগুলো সব চোখের নীরবতায় ভীড় করে ছিল।
ওরা কেউ কাউকে কিছু বললো না। তবে পাশাপাশি ঐ রাতে যে সময়টুকু দুজনে ছিলো, তাতে একজন আর এক জনকে নিজেদের মনের কথা মুখে কিছু না বলেই সব বলে ফেলেছিল।
পরেরদিন সকালে 'ও' চলে গেলো। রায়হান ভার্সিটিতে ওর বন্ধুদের মাঝে। এক বুক জ্বালা নিয়ে সবাইকে হাসিয়েছে- নিজে হেসেছে। কাউকে বুঝতে দেই নাই ওর মনের ভিতর যে ঠান্ডা আগুন জ্বলছে তার স্বরূপ। নিপার জন্য প্রচন্ড ভালোবাসা থাকা স্বত্বেও ওকে বলতে না পারার অক্ষমতায় রায়হান শেষে এক অন্ধকার জগতে নিজেকে হারিয়ে ফেলে। অনেকগুলো বছর নিজেকে তিলে তিলে কষ্ট দেয় সেই জগতে থেকে।
নিপার সাথে আর কোনদিন রায়হানের দেখা হয় নাই। তবে সে রায়হানের বাসায় যে সোফায় শুয়ে ছিলো, সেখানে ওর যুবতী শরীরের মন মাতাল করা ঘ্রান লেগে ছিলো। মাইলসের 'প্রথম প্রেমের মত' গানের সাথে সেই ঘ্রান জড়িয়ে আছে। রায়হান যখনই ঐ সোফার কাছে যায়, ওখানে বসে- নিপার ঘ্রান পায়! ওর প্রথম এবং শেষ ভালোবাসার ঘ্রান!
... ... ...
যে অন্ধকার টানেল দিয়ে রায়হান অতীতে ফিরে গিয়েছিল, একই পথে আবার সে ফিরেও আসে। নিপার স্মৃতি জড়ানো মাইলসের গানটি হৃদয়ের কোথায় যেন বেজে উঠে! সে ঐ সোফায় শুয়ে নিপার উপস্থিতি অনুভব করতে চায়। যেভাবে তেইশ বছর আগে গভীর রাতে একাকী কান্নাকে চাপিয়ে রাখার চেষ্টা করতো। সকালে আবার ভার্সিটিতে গিয়ে স্বাভাবিক হয়ে যেত ...হাসত-হাসাত। কান্নাকে কঠিন ভাবে দমিয়ে রাখা শিখে গিয়েছে সে। কারণ একজন পুরুষ কখনো প্রকাশ্যে কাঁদতে পারে না।
রেখাকে কে বিয়ে করার পরে আস্তে আস্তে নিপার স্মৃতি ঝাপসা হয়ে আসতে থাকে। ওর সাথে আর দেখা করতে ইচ্ছাও করে না।ওর মোবাইল নাম্বার আছে। কিন্তু ফোন করে না। সেই সোফা এখনো রায়হানের কাছে আছে। কিন্তু সেখানে এখনো নিপার শরীরের ঘ্রান। এটা কি কল্পনার নয়? যদিও বাস্তবে ওর পুরো অস্তিত্ব জুড়ে এখন ওর বউ এর ঘ্রান । যেদিকে যায়, এখন সে শুধু বউয়ের-ই ঘ্রান পায়। কিন্তু অলস একেলা মুহুর্তগুলোতে থেকে থেকে প্রথম প্রেমের সেই এক কিশোরির অনাঘ্রাতা বুকের চাপা ফুলের ঘ্রানে রায়হান দিশেহারা বোধ করে। যাকে সে কিছু কথা বলার থাকলেও বলতে পারেনি। তখনি রেখার কাছে ফিরে যায়।
নিপা আর রেখা... হৃদয়ে জন্ম নেয়া প্রেম আর অভ্যাসগত ব্যবহারিক ভালোবাসা!
স্মৃতিতে দুজনেই যায়গা করে নিয়েছে রায়হানের। একজন অতীত-অন্যজন বর্তমান।
হায় প্রেম!
সময়ের সাথে সব কিছুই কিভাবে যেন বদলে যায়।
আসলেই কি তাই?
বিষয়: সাহিত্য
১৭২৮ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ধন্যবাদ লেখককে সুন্দর লেখাটির জন্য
সহমত আপনার সাথে।
শুভেচ্ছা রইলো ব্লগে ঘুরে যাবার এবং অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
আসলেই কি তাই? হয়ত বা না । অথবা হ্যা ।
আমার মনে সময়ের সাথে আমরা নিজেদের বদলিয়ে নেই ,নেয়াই বুদ্ধিমানের কাজ তবে ভিতরে মনে হয় একটা ক্ষত থেকেই যায় ।কখনো সেই ক্ষতটা থেকে বেড়িয়ে আসে একটা দীর্ঘস্বাস ।
দৃশ্যত সময়ের বদল হয়, সাথে বাহ্যিক দিকটি হয়ত বদলে যায়; কিন্তু অভ্যন্তরীণ দিকটি হয়ত একই থেকে যায়। আর একবার হৃদয়ের ক্ষত হলে, কোনোভাবেই সেই ক্ষত নিরাময় হয় না। সময় হয়ত প্রলেপ দিতে পারে, তবে একেবারে ভালো হয়না।
অনেক ধন্যবাদ সুন্দর অনুভূতি রেখে যাবার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
সুন্দর গল্পের জন্য ধন্যবাদ।
ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মন্তব্যটির জন্য। অনেক ভালো লাগলো আপনার দেয়া বিশেষণটি!
শুভেচ্ছা রইলো আপনার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
অপূর্ব অপূর্ব অপূর্ব আপনার লিখনি।
আপনার এমনটা কেন মনে হল জানি না, তবে আমি কিছুই বললাম না।
শুভেচ্ছা আপনার জন্য।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
মন্তব্য করতে লগইন করুন